Uncategorized

দিনাজপুরে দাবদাহ: ‘মনে হওছে গা পুড়ি যাওছে’

গত এক সপ্তাহে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিক্রি, বাতাসের আর্দ্রতা ২২ শতাংশ। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছিল। সাধারণত তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করলেই তীব্র দাবদাহের আওতায় পড়ে। তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ১০ জুন পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।

লিচুচাষিদের ক্ষতি বেশি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী জেলায় ৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে ৫ হাজার ৪১৮টি। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩১ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন। শীত কম হওয়ায় গাছে মুকুল কম এসেছিল। তার ওপর অনাবৃষ্টিতে ফলন কমেছে। সর্বশেষ প্রচণ্ড দাবদাহে লিচুচাষিদের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

আজ সকালে শহরের কালিতলা নিউমার্কেট এলাকায় লিচুর বাজার ঘুরে দেখা যায় চারুবাবুর মোড় থেকে সুইহারি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় ভ্যান ও ইজিবাইকে করে লিচু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন চাষিরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে আড়তে লিচু নিতে পারছেন না। প্রচণ্ড রোদে লাল রঙের লিচু কালো হয়েছে।

বিরল উপজেলার রবিপুর এলাকার লিচুচাষি শিশির শাহ বলেন, ১২ হাজার মাল (লিচু) আনছি সকাল সাড়ে আটটায়। এখন বাজে ১১টা। এখনো আড়তে নিতে পারিনি। জানালেন, রোদে লিচুর খোসা পুড়ে কালো হয়েছে। দাগওয়ালা লিচুর দামও কমে গেছে। বিরূপ আবহাওয়ায় এবার লিচুচাষিদের খারাপ অবস্থা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেদানা জাতের প্রতি ১০০টি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। মৌসুমের শুরুতে যেটা ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এ ছাড়া মাদ্রাজি লিচু প্রতি ১০০টি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা থেকে কমে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, বোম্বাই ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা থেকে কমে ২৫০ টাকা এবং চায়না থ্রি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে কমে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাসিমপুর এলাকার লিচুচাষি ও ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘লিচুর চেহারা দেখে অনেকে দামও বলছেন না। এবার ধরা খাইছি। বাগানে যে লিচু প্রতি এক হাজার কেনা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকায়। সেই লিচু তিন হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারছি না।’

Related Articles

Back to top button