চেয়ারম্যানের সামনে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হলো ১৬ মাসের শিশুকে

ঢাকার ধামরাইয়ে সেই গাঙ্গুটিয়া ইউপি কার্যালয়ে সালিশি বৈঠক থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের সামনেই মায়ের কোল থেকে ১৬ মাসের শিশুকন্যাকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ ওই শিশুকন্যার ফুফু সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন বছর আগে উপজেলার লাড়ুয়াকুণ্ড গ্রামের মো. ফরহাদ হোসেনের মেয়ে ময়ুরী আক্তারকে বিয়ে করেন একই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের হাতকোড়া গ্রামের সিদ্দিক আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম সিয়াম। তাদের দাম্পত্য জীবনে রয়েছে সাদিয়া আক্তার নামে ১৬ মাসের এক ফুটফুটে মেয়ে।
এ শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকেই ওই গৃহবধূর ভাগ্যে নেমে আসে চরম দুর্দশা। মোটা অংকের যৌতুকের দাবিতে স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ মিলে অমানুষিক জুলুম নির্যাতন শুরু করে। যৌতুকের দাবিতে মারধর করে ওই গৃহবধূকে তার কন্যাসন্তানসহ পিত্রালয়ে তাড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনা নিয়ে কুল্লা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মো. আব্দুল বারেকের মধ্যস্থতায় গাঙ্গুটিয়া ইউপি কার্যালয়ে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সালিশ বৈঠক বসে। এতে সভাপতিত্ব করে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা। এ সালিশি বৈঠকে ওই চেয়ারম্যানের সামনেই গৃহবধূর কোল থেকে সুমি আক্তার নামে এক তরুণী ১৬ মাসের ওই শিশুকন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এরপর চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা ওই শিশুকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে রাত ১০টার দিকে ওই ভুক্তভোগী পরিবার ধামরাই থানায় এসে এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া শিশুকে উদ্ধার করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে ওই গৃহবধূ বলেন, আমার বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে অমানুষিক জুলুম নির্যাতন চালিয়ে আসছে আমার ওপর। একপর্যায়ে আমাকে বেদম পিটিয়ে আমার সন্তানসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যান কার্যালয়ে সালিশ ছিল। চেয়ারম্যানের সামনেই আমার কোল থেকে দুধের শিশুকে ছিনিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল বারেক বলেন, বিষয়টি খুবই অমানবিক। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে থানার ওসি মো. হারুন অর রশীদ বলেন, শিশু উদ্ধারের জন্য ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।