কেন পুরো সিনেমাটি পানির নিচে কঠিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দৃশ্যায়ন করা হল Avatar 2

কেন পুরো সিনেমাটি পানির নিচে কঠিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দৃশ্যায়ন করা হল Avatar 2
প্রযুক্তি আবিষ্কারে অ্যাবাটার. নিজেদের যেন নিজের রায় ছাড়িয়ে গিয়েছে. তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এবং তারাই. প্রথম সিনেমা থেকেও দ্বিতীয়টি প্রযুক্তি ছিল আরো জটিল. এতসব প্রযুক্তির কারসাজি বিফলে যায়নি. একপ্রকার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবারে অস্কারে সেরা ভিজুয়াল এফেক্ট ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতে নেয় সিনেমাটি।
তৃতীয় সিনেমার মূর্তিতে কেন তেরো বছর লাগলো? সেই সঙ্গে আরো কিছু চমকপ্রদ তথ্য নিয়ে এবারের প্রতিবেদন. দু হাজার নয় সালের প্রথম এই দৃশ্যটির সাথে যদি দুহাজার বাইশ সালে রবার্টরের এই দৃশ্যের তুলনা করা হয়।
যাবে বিস্তর পার্থক্য. কারণ প্রথম এভাটারের এই দৃশ্যটি ধারণ করা হয় সম্পূর্ণ শুকনো স্থানে. তবে তেরো বছর পরে সে ডানা থেকে কেন পুরো সিনেমাটি সম্পূর্ণ পানির নিচে এত কঠিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দৃশ্যায়ন করা হলো সবার মনে হয়তো প্রশ্ন এসেছে আভাটার টু।
আভাটার টুকে এবারের অস্কারে সেরা ভিসুয়াল এফেক্টস ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয় মূলত বেশ কয়েকটি কারণে. প্রথম এভারেটরে মোশন ক্যাপচার প্রযুক্তিতে মাথায় ব্যবহার করা হয়েছিল একটি ক্যামেরা. যা মূলত টুটি নির্ভর প্রযুক্তির ছিল. এই প্রক্রিয়ায় পোস্ট প্রোডাকশনের বাড়তি সময় ব্যয় করতে হতো. কিন্তু তারা ব্যবহার করেছে দুইটি ক্যামেরা. এই ক্যামেরা দুটো AI প্রযুক্তি নির্ভর. যার ফলে আগের চেয়ে এবার তারা আরো সুক্ষ ও নির্ভুল চেহারার অভিব্যক্তি ধারণ করতে পেরেছে।
এই সিনেমায় পানির উপরের মোশন ক্যাপচার যতটা না কঠিন ছিল তার চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল পানির নিচের দৃশ্য ধারণ. প্রথম এভাটারের পানির উপরে ধারণকৃত দৃশ্যটির রেফারেন্স ফুটেজটি পোস্ট প্রোডাকশনে এডিটে বেশ কষ্টদায়ক ছিল. কারণ পানির ওপরে ও নিচে মানুষের নড়াচড়া এক লয়. অপরদিকে সেটে পানির নিচে আলোর প্রতিফলন সবসময় একরকম কাজ করছিল না. ওয়েটার স্টুডিও একই সমস্যায় পড়েছিল প্ল্যানেট অফ দ্য এফ সিনেমার সেটে দিনের বেলার শুটিংয়ে।
মোসন capture প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হলে সেটি infered লাইট ব্যবহার করতে হয়. তবে এই infered light ডাঙ্গায় কাজ করলেও পানির নিচে কাজ করে না. তাই তারা এই প্রথমবার ব্যবহার করেছে ultra violet blue লাইট।
এখানেও বাঁধে বিপত্তি. কারণ ডাঙ্গার আর পানির নিচের আলো ভিন্ন হওয়ায় অত্যাধুনিক ক্যামেরাগুলোও ঠিকভাবে দৃশ্য ধারণ করতে পারছিল না. তাই এই অপ্রত্যাশিত আলো থেকে বাঁচতে তারা পানির উপর ছোট ছোট পিংপং মল ব্যবহার করেছে. পানির নিচে দৃশ্য ধরনের বিপত্তি যেন শেষ ছিল না।
সব চেয়ে বেশি অসুবিধা করছিল এয়ার বাবল বা বুদবুদ. এই বুদবুদ থেকে বাঁচতে একটাই পথ ছিল. আর তা হল লম্বা সময় পানির নিচে শ্বাস ধরে রাখা. সিনেমার শুটিং শুরুর আগে প্রত্যেক অভিনয় শিল্পীদের দীর্ঘ ছয় মাস অলিম্পিক ও ইউএস নেভিদের সাথে ট্রেনিং নিতে হয়েছিল. প্রত্যেককে সর্বনিম্ন পাঁচ মিনিট শ্বাস ধরে রাখার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়. ট্রেনিং স্টেশনে কেট উইন স্লেপ্ত টমক্রুসের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের শ্বাস ধরে রাখার রেকর্ড ভেঙে বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলেছিল. কেটে রেকর্ড ছিল সাত মিনিট পনেরো সেকেন্ড।
স্টুডিওটির সব আকৃতির প্রাণী ও জলযান গুলো কিভাবে পানির নিচে উপরে চলাচল করে. তার গতিবিধি লক্ষ্য করেছে কয়েক বছর. পুরো সিনেমায় তারা মোট দু হাজার দুশো পঁচিশটি পানির দৃশ্য ধারণ করেছে।
সিনেমা ভিইফএক্স আর্টিস্টদের জন্য আরো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল. একই সাথে মানুষ ও সিজিআই চরিত্রগুলোকে এক ফ্রেমে ধারণ করা. বড় বড় খেলার মাঠে যেভাবে স্পাইডার ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়।
ঠিক একই প্রক্রিয়ায় ক্যামেরার পরিবর্তে ছোট মনিটর বসিয়ে তারা সাধারণ মানুষের সাথে নয় ফুট নাভি ক্যারেক্টার গুলোর দৃশ্যারণ করেছে. অবাক করা বিষয় হলো এই প্রযুক্তিটি আবিষ্কার করা হয় সিনেমার শুটিং শুরু হওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সিনেমার দৃশ্য ধারণের সময় প্রতিনিয়ত নির্মাতারা আরো ছোট ছোট অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছিল.
একটি সিনেমার জন্য এত এত প্রযুক্তিগত পরিকল্পনার নজির আর কোন সিনেমার নেই. আর এই সমস্ত উদ্ভাবন যে পরবর্তী প্রজন্মের সিনেমাকে আরো আধুনিক করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।